আমাদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন জিনিস তা যাচাই করতে গেলে নানান মতামত উঠে আসবে ঠিকই। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী বলতে গেলে প্রথমেই মনে পড়ে যায় মৌমাছি-ভ্রমর- প্রজাপতিদের কথা। মৌমাছির পাখা না নড়লে টান পড়বে আমাদের খাদ্য উৎপাদনেই। ‘The Science Times’ এর রিপোর্ট অনুসারে পৃথিবীর ৭০শতাংশ কৃষিকার্যই মৌমাছিদের পরাগমিলন এর মধ্যে হয়ে থাকে। তাই ‘Earth Watch Institute’ নির্দ্বিধায় মৌমাছিকে পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় প্রাণ বলে ঘোষণা করেছে। Apiculture Entrepreneurship Center of the Universitad Mayor এবং আরো দু’টি সংস্থার সমীক্ষায় উঠে এসেছে– মৌমাছি একমাত্র প্রাণী যা ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস বা ছত্রাকের মত কোন অনুজীব প্রকৃতিতে ছড়িয়ে দেয় না।
এতসব কিছু সত্ত্বেও প্রকৃতি ও মানুষের পরম বন্ধু ও গুরুত্বপূর্ণ প্রাণ মৌমাছিরা আজ বিলুপ্ত প্রায়। বিগত কয়েক বছরে প্রায় ৯০ শতাংশ মৌমাছি পৃথিবী থেকে চিরতরে হারিয়ে গেছে। এর প্রধান কারণ অনিয়ন্ত্রিত ও অস্বাভাবিক হারে জমিতে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশকের ব্যবহার। পাশাপাশি তথাকথিত উন্নয়নের নামে নির্বিচারে সবুজ বনানী ও অরণ্য ধ্বংস এবং সাথে সাথে ফুলের পরিমাণ কমে যাওয়াও অন্যতম একটি কারণ।
তাই নিজেদের খাদ্যের যোগান ও বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে অবিলম্বে রাসায়নিক সার ও সবচেয়ে ক্ষতিকারক সাতটি কীটনাশকের ব্যবহার বন্ধ করে জৈব চাষের দিকে ঝুঁকতে হবে। যা মৌমাছিদের রক্ষা করার পাশাপাশি জমির উর্বরতা শক্তি ও শস্য উৎপাদনও বাড়াবে নিঃসন্দেহে।
ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে মৌমাছিরা ফিরে আসুক-তাদের পাখার কলতানে ভরে উঠুক প্রকৃতি। বাঁচুক প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ। পৃথিবীর জীব-বৈচিত্র্য রক্ষা পাক। খেয়ে পরে, হেসে খেলে বেঁচে থাকুক মানব সভ্যতা।
তথ্যসূত্র:
প্রত্যেক প্রানী জীবজগতের একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। মানুষের টিকে থাকার জন্য মৌমাছির বেঁচে থাকা অনেক গুরুত্বপূর্ন।