পুলক গোস্বামী
গত ২৭শে মে ২০২০ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯ মহামারী থেকে উদ্ভূত অনিশ্চয়তা থেকে কিভাবে জনগণকে মুক্ত করতে হবে সে সম্পর্কে এক পথনির্দেশ দেয়। তাতে বলা হয়েছে যে বিগত শতাব্দীতে এই ধরনের মহামারী দেখা যায়নি এবং যে ভাইরাস থেকে এর উৎপত্তি তাও আমাদের অজানা। এর থেকে উদ্ভূত অনিশ্চয়তা’ জনগণের মধ্যে ভয় আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রতি তার বিশ্বাসে চিড় ধরেছে। অনিশ্চয়তাকে দূর করে জনগণ যাতে স্বাস্থ্য কর্তৃত্বের উপর আস্থা রাখতে পারেন এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সুপারিশ গুলি মেনে চলেন তার পথনির্দেশ তৈরি করেছে – Risk Communication and Community Engagement Research. যাদের মূলকথা হলো এই অনিশ্চয়তা বর্তমান জীবনের অঙ্গ এবং একে ইচ্ছামতো দূরে সরিয়ে রাখা যাবে না। তাই ডাক্তার-বৈজ্ঞানিকদের দ্বর্থহীনভাবে এবং পরিষ্কারভাবে এই অনিশ্চয়তার সমনা সামনি করতে হবে এবং এর জন্য সমস্ত রকমের তথ্য জনগণের সামনে উপস্থিত করতে হবে।
কিন্তু চিকিৎসাশাস্ত্রের মূল লক্ষ্য হচ্ছে রোগকে নির্মূল করা এবং নির্মূল করার নিশ্চয়তাকে সামনে আনা। তাহলে অনিশ্চয়তাকে টিকিয়ে রেখে অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে কিভাবে লড়াই করা যাবে? তাহলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনিশ্চয়তাকে প্রবেশ করানোর উদ্দেশ্য কি?
ক্যান্সার রোগের নিরাময়ের ক্ষেত্রে আজকের বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি কিরূপ তা দেখা যাক। P-53 জিনের কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়ায় কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে, ফলে টিউমার তৈরি হয়। এখান থেকেই তৈরি হয় ক্যান্সার। এই রোগ কি সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হওয়া সম্ভব? বিশেষজ্ঞরা নির্দিষ্ট কোনো উত্তরের বদলে অর্থাৎ ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলবেন না। তারা পরিসংখ্যান দিয়ে ব্যাখ্যা করবেন রোগী কতদিন বাঁচবেন। অর্থাৎ কার্যকারণ সম্পর্ককে জীববিজ্ঞান থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দিয়ে তাকে পরিসংখ্যান বিদ্যার অধীনে নিয়ে এসে রোগকে ব্যাখ্যা করাই আজকের বিজ্ঞানের ভূমিকা। এতে লাভ কি? ক্যান্সারকে কেন্দ্র করে ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসা চলে। পরীক্ষা (Test) এবং চিকিৎসাতে
(Treatment) যেসকল মূল্যবান মেশিনারি ব্যবহৃত হয় তা পুঁজি নিয়োগের একটি বড় ক্ষেত্র। তাই মলিক্যুলার বায়োলজিকে কাজে লাগিয়ে জিনকে সারিয়ে তোলার চিকিৎসা-বিজ্ঞানকে কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথ করে রাখা হয়েছে পুঁজির স্বার্থে। রোগকে টিকিয়ে রেখে তাকে দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা করার আরেক নাম আধুনিক চিকিৎসা-বিজ্ঞান। সুগার, প্রেসার প্রভৃতি রোগের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। এই প্রসঙ্গে লেভিন ও লিওনটিন কি বলেছেন দেখা যাক – “Certainly an understanding of human anatomy and physiology has led to a medical practice vastly more effective than it was in the 18th century. These advances, however, consist in greatly improved methods for examining the state of our insides, of remarkable advances in micro plumbing, and of pragmatically determined ways of correcting chemical imbalances and of killing bacterial invaders. None of these depends on a deep knowledge of cellular processes or on any discoveries of molecular biology. Cancer is still treated by gross physical and chemical assaults on the offending tissue. Cardiovascular disease is treated by surgery whose anatomical bases go back to the 19th century, by diet and by pragmatic drug treatment. Antibiotics were originally developed without the slightest notion of how they do their work. Diabetics continue to take insulin, as they have for sixty years, despite all the research on the cellular basis of pancreatic malfunction. Of course, intimate knowledge of the living cell and of basic molecular processes may be useful eventually, and we are promised over and over that results are just around the corner.”
কোভিড-১৯ কে তাই অনিশ্চতার জালে জড়াতে হবে। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নিদান হল সমস্ত ধরনের বিপরীত মতামতকে জনগণের সামনে তুলে ধরা যাতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়। জনগণ হতাশাগ্রস্থ হচ্ছে যখন তারা দেখছেন বিজ্ঞানীরা, যাদের কাজ হল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে নির্দিষ্ট উত্তর প্রদান করা, তারাই একে অপরের বিপরীতে অবস্থান করছেন। তা রোগের উৎসস্থল হোক বা চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ই হোক অথবা রোগপ্রতিরোধক ব্যবস্থাই হোক। যেমন কেউ বলছেন ভাইরাসটি জুনোটিক এবং বাদুড়ের দেহ হতে মনুষ্যদেহে প্রবেশ করেছে, আবার অন্যরা বলেন – চীনের উহানে ল্যাবরেটরীতে উৎপত্তি। মাস্ক পরলে ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ হবে, আবার তার বিপরীতে কেউ বলছেন- মাস্ক শরীরের মধ্যে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বাড়াবে, অক্সিজেন কমাবে ফলে অন্যান্য রোগের শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে। স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে ভাইরাসটির যেমন মৃত্যু ঘটবে আবার শরীরের চামড়ায় থাকা উপকারী ভাইরাসগুলিরও মৃত্যু ঘটবে। ভাইরাসের টিকাকরণ সংক্রান্ত বিষয়েও দ্বিমত পোষণ করেন বিজ্ঞানীরা। কেউ বলছেন – এতেই হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে, আবার অন্যরা বলছেন- সেফটি ডাটা পরীক্ষিত নয় এবং এই টিকা পরবর্তীকালে শরীরের ক্ষতি করবে। প্রায় প্রতিটি পদক্ষেপে অফিস করা, যানবাহন ব্যবহার করা, স্কুলে বাচ্চাদের পাঠানো সকল বিষয়েই স্বাস্থ্যকর্তারা দ্বিধাবিভক্ত। আর এখানেই সফল পুঁজির মালিকেরা। এই অনিশ্চয়তা একদিকে টিকে থাকবে আর একে কেন্দ্র করে মাস্ক, স্যানিটাইজার, ওষুধ, টিকার ব্যবসা রমরমিয়ে চলবে। উল্টোদিকে মানুষকে গৃহবন্দি করে, প্রকৃতি ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করে, মানুষের মধ্যে ভীতি সঞ্চার করে স্বাভাবিক রোগটিকে অস্বাভাবিক করে সামনে আনার উদ্দেশ্য কি? উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রকৃত কার্য কারণ সম্পর্ককে সামনে আসতে না দেওয়া, তাহলে পুঁজির উন্নয়নের তত্ত্ব উলঙ্গ হয়ে যাবে। আসলে বন জঙ্গল কেটে পুজিঁর বৃদ্ধি হতে পারে কিন্তু মানুষের উন্নয়ন হয়না। মানুষ আক্রান্ত হয় জুনেটিক ভাইরাস দ্বারা, কারন তার বাসস্থান কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কত ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক এই সুযোগে মানুষের শরীরে প্রবেশ করল এমনকি রেমডেসিভির নামক ওষুধ, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও কালোবাজারে প্রায় ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। শোনা যাচ্ছে এই রোগ ২০২৫ সাল অব্দি তার তান্ডব চালাবে। ফলে টিকাকরণের ব্যবসায় কত ট্রিলিয়ন ডলার মুনাফা হবে তার ইয়ত্তা নেই।
কিন্তু এর থেকে কি কোনো মুক্তি নেই? বিশ্বের অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা একমত যে, এই ভাইরাস প্রাণীদেহে থেকে মনুষ্যদেহে প্রবেশ করেছে। বাদুড়ের দেহস্থিত ভাইরাস প্যাঙ্গোলিনের মাধ্যম হয়ে মানুষের দেহে প্রবেশ করেছে। বাদুড়ের বাসস্থান বন-জঙ্গলে। বাদুরের দেহস্থিত জুনোটিক ভাইরাস সমন্বয় করে বাস করে। তাতে কারোরই কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু পুঁজির আগ্রাসী মুনাফা-লালসার কাছে পরিবেশ আজ ধ্বস্ত। খনিজ পদার্থের লোভে, কৃষি উৎপাদনের লক্ষ্যে, নগরায়নের লক্ষ্যে জঙ্গল কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে অনুজীবীসহ বহু প্রাণী নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভাইরাস হলো আদিম প্রাণী- প্রাণীর শরীরে থাকলে জীবিত কিন্তু বাইরে মৃত। তার পক্ষে বেঁচে-বর্তে থাকা কঠিন নয়। ফলে জঙ্গলের অভাবে বাদুড়ের বংশ ধ্বংস হলেও ভাইরাসকে শেষ করা যায় না। তাই সে মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। পরিবেশকে রক্ষা করে সমস্ত প্রাণীদের বেঁচে থাকার অধিকারকে ফিরিয়ে দিয়ে তবেই মানুষের বেঁচে থাকার শর্তকে সুনিশ্চিত করতে হবে। অথচ একদিকে মানুষকে পরিবেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে, অন্যদিকে উন্নয়নের নামে পরিবেশকে ধ্বংস করা হচ্ছে মুনাফার স্বার্থে। এই নিশ্চয়তার কারণটিকে কেন সামনে আনা হচ্ছে না তা পরিষ্কার। প্রকৃতির সাথে মানুষের এই দ্বান্দ্বিক সম্পর্ককে গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে এই রোগের ক্ষেত্রে মানুষের দেহের অভ্যন্তরে কি ঘটছে দেখা যাক।
আমাদের শরীরে প্রতিরোধকারী টি-সেলের সাথে বাহির থেকে আগত শত্রু ভাইরাসের একটি দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক আছে। টি-সেল শত্রু ভাইরাসকে মারার জন্য যে পরিমাণ রাসায়নিক নির্গত করে তার পরিমাণ নির্ধারিত হয় সঠিকভাবে যদি ভাইরাসটি সম্পর্কে আগে থেকেই জানা থাকে। কিন্তু এখানে একদিকে ভাইরাসটি অচেনা, জুনোটিক ভাইরাস যা পশুর থেকে আগত এবং উল্টো দিকে আক্রান্ত ব্যক্তি আতঙ্কগ্রস্ত থাকার কারণে যে পরিমাণ রাসায়নিক নিঃসরণ করা উচিত তার থেকে বেশি পরিমাণ নিঃসরণ হচ্ছে যা সাইটোকাইন ঝড় হিসাবে পরিচিত। তাই ভাইরাসের কারণে মানুষ মরছে না, মরছে তার থেকে বেশি এই অপরিমিত সাইটোকাইন ঝড়ে। দেখা গেছে যে, যারা সামাজিকভাবে বা সম্প্রদায়গতভাবে জীবন যাপন করেন তাদের ক্ষেত্রে এই সাইটোকাইন ঝড়ের প্রভাব কম। ফলতঃ একা একা বাঁচার যে সমাজ আমরা গড়ে তুলেছি তাতে কোভিডের মতো ভাইরাসদের আক্রমণ আরও সহজ হয়েছে।
আর এর সুযোগ নিয়ে কিভাবে পুঁজিপতিরা মুনাফার লুঠতরাজ চালাচ্ছে তা বোঝা যায় যখন দেখি মাত্র কয়েকশ টাকার চিকিৎসায় যেখানে এই রোগ সেরে যায়, সেখানে বেসরকারী হাসপাতালগুলি কয়েক লক্ষ টাকার বিনিময়ে চিকিৎসা দিচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে কম্যুনিটি লিভিং অর্থাৎ সম্প্রদায়গত ভাবে বাঁচতে হবে। কোভিড রোগীর মৃতদেহকে প্যাথোলজিক্যাল অটোপ্সি করে জানা গেছে যে, এই রোগ ফুসফুসের অ্যালভিওলাইয়ের মধ্যে জল তৈরি করে যা বাতাসের অক্সিজেন ও কার্বন-ডাই-অক্সাইডের আদান প্রদানকে বাধা দেয়। স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে পাঁচ দিনের পর প্রয়োগ করলে ফুসফুসের এই জল তৈরি হতে বাধা দেয়। আরো জানা গেছে যে, রক্তনালিকার মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধিয়ে রোগীকে মৃত্যুর মুখে নিয়ে যায় এই রোগ।
সে ক্ষেত্রে Ecospirin-75 জাতীয় কমদামী ওষুধ খুবই ফলদায়ক। তাই পাড়ায় পাড়ায় দলীয়ভাবে সকলের সাথে মিলেমিশে এই সংক্রান্ত প্রতিটি বিষয়ে আলোচনা করে রোগটিকে নজরদারি করলে এবং ডাক্তারের তত্বাবধানে ওষুধ প্রয়োগ করলে এই রোগকে আটকে দেওয়া অনেকটাই সহজ হবে। শুধুমাত্র যাদের কোমরবিডি আছে, তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা করতে হবে। এতে হাসপাতালে ভিড় কম হবে। পাড়ার ক্লাবগুলি ছিল সম্প্রদায়গত ভাবে বেঁচে থাকার কেন্দ্র। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়গুলিতে ক্লাব গুলির ভূমিকা ছিল অনবদ্য।
অথচ মানুষ আজ সম্প্রদায়গত ভাবে বাঁচতে পারছে না কেন? বিশ্বায়নের পূর্বে বড় বড় কারখানার মধ্যে উৎপাদন সংগঠিত হত। বহু শ্রমিক একসঙ্গে কাজ করতেন। উৎপাদনের ভিত্তি ছিল সহযোগিতামূলক শ্রম। দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য, ম্যানেজমেন্ট এবং সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করার স্বার্থে শ্রমিকদের দেশ জোড়া বৃহৎ বৃহৎ ইউনিয়ন সংগঠন গড়ে উঠেছিল। সামাজিক জীবনও ছিল সহযোগিতামূলক। ব্যক্তিস্বার্থের তুলনায় সামূহিক স্বার্থই ছিল প্রধান। সাম্প্রদায়িক ভাবে বেঁচে থাকার উপায় ছিল শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রভৃতি বিষয়গুলি। বিশ্বায়ন আসার সাথে সাথে বাজারকে সম্প্রসারিত করার উদ্দেশ্যে বড় বড় শিল্পগুলিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে ফেলা হলো। কারখানায় কারখানায় শ্রমিক সংখ্যা কমে গেল। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একটি মেশিন এবং চার-পাঁচ জন শ্রমিক নিয়ে তৈরি হলো একেকটি কারখানা। ফলতঃ সহযোগিতামূলক শ্রমের ভিত্তিকে ছেঁটে দেওয়া হলো। ইউনিয়নগুলি দুর্বল হলো। সামাজিক স্বার্থের জায়গা দখল করল ব্যক্তি স্বার্থ। শ্রমিকশ্রেণী থেকে বিচ্ছিন্ন করে আইটি সেক্টরের ভেতর দিয়ে একটি বিশেষ ধরনের মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরি করা হল। তারাই হয়ে উঠলো পুঁজির উৎপাদনের পারচেজিং ক্ষমতা। অন্যদিকে উৎপাদনে যুক্ত শ্রমিকদের বেতন নিম্নগামী হল। শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য ১২ ঘন্টা শ্রম করতে বাধ্য হলো উৎপাদনে থাকা ঠিকা শ্রমিকরা। আইটি শিল্পের শ্রমিকদেরও ১২ঘণ্টা কাজের চাপ। সামাজিক ভাবে মেলামেশা করার সুযোগ নষ্ট হল। শুধুমাত্র বাজারে পণ্য কেনার মাধ্যমে সে নিজেকে সামাজিক মানুষ হিসেবে উপলব্ধি করতে থাকলো। মানুষের পাশবিক আকাঙ্ক্ষা (Animalitic need)-কে বাড়িয়ে তুলে পুঁজির মুনাফাকে সুনিশ্চিত করার পথ যেমনটি কেইন্স বলেছিলেন তারই বাস্তব রূপ দেখা যাচ্ছে। সামাজিক মানুষ আজ চরম ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যে নিমজ্জমান। মুনাফা এবং সম্প্রদায়গত ভাবে বেঁচে থাকা আজ পরস্পরবিরোধী অবস্থানে।
তাই আজ এটাই প্রতীয়মান হচ্ছে যে, মানবজাতিকে তার নিজের জন্যই শুধু নয়, এই শশাগরা পৃথিবীর সমস্ত প্রাণ-প্রকৃতির জন্য ভাবতে হবে। সকলের বেঁচে থাকার শর্তাবলী তৈরি করতে হবে। তবেই মানবজাতি সুস্থ সবলভাবে বেঁচে থাকবে। এর বিপরীতে কর্পোরেট স্বার্থ কিভাবে মানুষকে রোগগ্রস্ত অবস্থায় রেখে সেখান থেকে টিকাদান, স্যানিটাইজার, ওষুধের ব্যবসা গড়ে তুলেছে এবং কোটি কোটি টাকা মুনাফা করছে সে সম্পর্কে সচেতন হয়ে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। ন অন্য পন্থাঃ।
ছবি : WHO
লেখক পরিচিতি:
কয়লা- খনির শ্রমিক ও সমাজ কর্মী।
Contact: