হোমো ভার্চুয়ালিস

পোস্টটি দেখেছেন: 41 শঙ্খদীপ ভট্টাচার্য ( একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তির চরম বিকাশের যুগে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও নবতম সংযোজন হলো মেটাভার্স।  এই বিষয়টি নানান দিক দিয়ে বিশদে আলোচনার দাবি রাখে, যা আজকের দিনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক। তাই এই সুদীর্ঘ লেখাটি কয়েকটি পর্বে ধারাবাহিকভাবে পরিপ্রশ্নের ওয়েব ম্যাগাজিনে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে পরিপ্রশ্ন পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলী। […]

শঙ্খদীপ ভট্টাচার্য

( একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তির চরম বিকাশের যুগে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও নবতম সংযোজন হলো মেটাভার্স।  এই বিষয়টি নানান দিক দিয়ে বিশদে আলোচনার দাবি রাখে, যা আজকের দিনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক। তাই এই সুদীর্ঘ লেখাটি কয়েকটি পর্বে ধারাবাহিকভাবে পরিপ্রশ্নের ওয়েব ম্যাগাজিনে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে পরিপ্রশ্ন পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলী। আমরা আশা রাখি দুই তিন দিন অন্তর অন্তর এক একটি পর্ব পাঠকদের দরবারে হাজির করতে পারবো। পাঠক ও শুভ্যানুধায়ীদের সহৃদয় সহযোগিতার প্রত্যাশায় বুক বাঁধলাম আমরা )।

পর্ব ১:

ইন্টারনেট থেকে মেটাভার্স:

হালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পৃথিবীতে এই মুহুর্তে ২৮০ কোটির বেশি মানুষ  ফেসবুক নামের জনপ্রিয়তম অনলাইন সামাজিক মাধ্যমে তাদের জীবনের মূল্যবান সময়টুকু ব্যবহার করে চেনা পরিচিতির গণ্ডীর মধ্যের বা বাইরের মানুষের গতিবিধিতে নজর রাখেন। গতিবিধি বলতে কোনও সৃষ্টিশীল কাজ নয়, সিধে কথায় তাদের ভ্রমণ ভোজন ইত্যাদি অতি সাধারণ নিত্যনৈমিত্তিক কাজের বিশেষ কিছু মুহূর্ত কথা। ইন্টারনেট আবিষ্কার হওয়ার ঠিক পরের মুহূর্তে পৃথিবীর কোনও মানুষই ভাবতে পারেননি যে ফেসবুক একদিন ইন্টারনেটে তুমুল হইচই ফেলে দেবে। মানুষ সমাজবদ্ধ জীব এবং এই কথাটির সর্বাংশ সত্যতা প্রমাণ করতে ফেসবুক হয়ে উঠবে এক অপরিহার্য সামাজিক মাধ্যম। জীবনসংগ্রামে ক্লান্ত অসহায় আবালবৃদ্ধবনিতার অন্যতম, কোথাও বা শেষ আশ্রয়। এই বিপুল জনমহাসাগরের ব্যস্ততায় নিজেকে হারিয়ে না ফেলে মাঝেমধ্যে জানিয়ে দেওয়া, আমি আছি। আমরা জেনেছি ফেসবুকের প্রত্যেক ইউজার তাদের ব্যক্তিগত জীবনের সবচেয়ে অভিজাত এবং মূল্যবান সময়কে ছবি বা ভিডিওর মাধ্যমে গোটা পৃথিবীর কাছে তুলে ধরে। বাহামার সমুদ্র সৈকতে সূর্যাস্তকে পেছনে রেখে নিজের পরিবারের সঙ্গে তোলা বেশ কয়েকটি ছবির মধ্যে সেরা ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করা হলে বন্ধুরা ছবিটি দেখে নির্ঘাত মনে করবে এমনই সুখী সেই মানুষটির জীবন, এ যেন তার রোজকার জীবনেরই একটা অংশ। বন্ধুটিও নিজেকে জাহির করতে নামী রেস্তোরাঁয় দামী খাবারের সামনে বসে তাদের নৈশ যাপনের ছবিগুলো ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়ে প্রমাণ করতে চাইবে এমনই সুখের জীবন তারও আছে। এই দুটি ঘটনার নেপথ্যে যে সাংঘাতিক জীবনযুদ্ধ, লবেজান সাংসারিক ঝুটঝামেলা, অকথ্য গালিগালাজ, নিবিড় অবসাদ জড়িয়ে আছে তা কখনোই  প্রকাশ্যে আসে না। সুখ দুঃখ, আনন্দ বিষাদ এইসবের দ্বন্দ্ব নিয়েই মানুষের জীবনের সার্থকতা। কিন্তু ফেসবুকে মানুষ নিজের জীবনকে খুশিমতো সাজিয়ে নিতে পারে। খারাপ অংশটিকে খারিজ করে তার সুপ্ত আকাঙ্ক্ষার কাছাকাছি সকল ঘটনাগুলিকে প্রয়োজনে অতিরঞ্জিত করে জনতার দরবারে তুলে ধরাতেই তার শান্তি, সন্তুষ্টি। রূঢ় বাস্তব থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার নিদারুণ প্রচেষ্টায় একে অন্যের এই অতিরঞ্জিত ভার্চুয়াল জীবনকে অবলম্বন করে  মানুষ দিনের বেশিরভাগ সময়টাতেই মেতে উঠবে এমনটা কেই বা অনুমান করতে পেরেছিল যখন ইন্টারনেট সবেমাত্র আমাদের জীবনে উঁকি দিয়েছিল বহুকাল আগে।

সামাজিক সম্পর্ক থেকে  শুরু করে বস্তুজগতের সকল কিছুর মতোই  দেশকালের মানদণ্ডে প্রযুক্তিরও উত্থান, বিকাশ, পতন রয়েছে। এই নিয়মেই এ হেন মারাত্মক প্রভাবশালী ইন্টারনেটের জায়গা দখল করতে চলেছে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি মেটাভার্স। বস্তুত, বিবর্তিত আজকের এই মানুষ প্রজাতিটিকে মেটাভার্স আজ থেকে বিশ বছর পরে ঠিক কোন জায়গায় নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাবে তার বিজ্ঞানসম্মত অনুমান যথেষ্টই  উদ্বেগজনক। তবু এই ভবিতব্যের থেকে প্রায় নিষ্কৃতি নেই বললেই চলে। বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে মেটাভার্সের আদ্যোপান্ত ভার্চুয়াল দুনিয়ায় প্রবেশ করাতে উঠেপড়ে লেগেছে বিশ্বের তাবড়-তাবড় প্রযুক্তি সংস্থাগুলি। ফেসবুক এবং মাইক্রোসফট তার মধ্যে অন্যতম। গুগল ,ফেসবুক, মাইক্রোসফট, আমাজন থেকে শুরু করে উবার ইত্যাদি কোম্পানিগুলি আমাদের মনোযোগ এবং দিনের বেশিরভাগ সময়কে অনলাইন দুনিয়ায় প্রবেশ করাতে এখনও পর্যন্ত দারুণ সফল। প্যানডেমিকের অনেক আগে থেকেই এই পরিকল্পিত অভ্যাসে আমরা মজে গিয়েছি। প্যানডেমিক কেবল আগুনে ঘি ঢেলেছে মাত্র। সামাজিক মাধ্যম, শিক্ষা, খেলাধুলো, অবসর বিনোদন ইত্যাদি প্রায় সবকিছুকেই জীবনে কাজে লাগাতে দরকার শুধু ইন্টারনেট কানেকশন এবং প্রয়োজনীয় অর্থ। ফ্যান্টাসটিক ভিডিও গেমের অতিলৌকিক ভার্চুয়াল জগতে আঠার মতো লেগে থাকা শিশুদের মগজ তো বটেই, অনলাইন যাপনে দীর্ঘদিন অভ্যস্ত পূর্ণবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্কও মেটাভার্স-কেন্দ্রিক এবং স্পেকুলেশন-ভিত্তিক নতুন এক অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার যথার্থ কাঁচামাল।

মেটাভার্স হেডসেট

পার্থিব বস্তুজগতে সম্পদ সসীম। তাই এই সম্পদকে ঘিরে বাজারের সম্প্রসারণ, সেই বাজারকে ঘিরে পুঁজির সঞ্চয়নও সসীম। একটি নির্দিষ্ট সময়ে পুঁজির সম্প্রসারণ হোঁচট খেতে বাধ্য। কিন্তু এমনই একটি বাজার যদি তৈরি করা যায় যেখানে সমস্ত পণ্যই আগাগোড়া ভার্চুয়াল এবং এই বাজারকে গড়ে তুলবে মানুষের ফ্যান্টাসীময় আকাঙ্ক্ষা তাহলে অসীম হারে পুঁজিকে বাড়িয়ে তোলার কোনও প্রতিবন্ধকতাই থাকবে না কারণ ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি বা মানুষের আকাঙ্ক্ষা এই দুটিরই কোনও সমাপ্তি বিন্দু নেই। সেই ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি হোক না যতই অবাস্তব, অবৈজ্ঞানিক, ভয়ংকর রকমের অপ্রাকৃতিক। হোক না মানুষের আকাঙ্ক্ষা যতই ব্যক্তিকেন্দ্রিক, অসামাজিক, বিধ্বংসী তাকে সরাসরি পণ্যে রূপান্তরিত করতে পারলেই কেল্লা ফতে। এমনই এক দুনিয়ার দিকে ক্রমশ আমরা এগিয়ে চলেছি যা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভার্চুয়াল, স্পর্শ করা যায় না। আকাঙ্ক্ষার তীব্রতায়, আশ্চর্য সব ফ্যান্টাসির ব্যাপকতায় শুধুমাত্র অনুভব করা যায়। মেটাভার্সের জগতে পা রাখতে দরকার একটি হেডসেট আর হাইস্পিড ইন্টারনেট কানেকশন।

ফেসবুকে যেমন প্রোফাইল তৈরি করে, পছন্দসই ছবি ব্যবহার করে একটা আইডেন্টিটি গড়ে তোলা যায় মেটাভার্সে এই আইডেন্টিটির নাম অ্যাভাটার (avatar)। অ্যাভাটারকে মনের মতো করে গড়ে নেওয়া যায়। অ্যাভাটার হতে পারে আমার পছন্দের সুপারহিরো বা সুদর্শন নায়ক নায়িকা। শুধু তাই নয়, স্পাইডারম্যান বা আফ্রিকার সিংহের চেহারা নিয়ে  অ্যাভাটার দাপিয়ে বেড়াতে পারে আমাদের নিজস্ব ফ্যান্টাসির জগতে। সকাল সকাল অন্য গ্রহের এলিয়েনকে নক্ষত্র যুদ্ধে পরাস্ত করে দুপুরবেলায় কিছুক্ষণের জন্য মগজে শাণ দেওয়া যেতে পারে স্তালিনগ্রাদে বসে শ্রেষ্ঠ দাবাড়ুর সঙ্গে দাবা খেলে। তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে বিকেলটুকু কাটিয়ে দেওয়া যেতে পারে হাওয়াইয়ের সমুদ্র সৈকতে। ভার্চুয়াল বিয়ারের গ্লাস হাতে নিয়ে নিউইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারে নিশিযাপন। কানে বাজবে বেঠোফেনের ফিফথ সিম্ফনি। এই সবই সম্ভব বাড়িতে বসেই।

মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পা দুটি হারালেও মানুষের আর চিন্তা নেই। ভার্চুয়াল পায়ে শুধু হেঁটে নয়, ডানা মেলে উড়ে পৌঁছে যাওয়া যেতে পারে এভারেস্টের চূড়ায়। কিংবা আচমকা আবদারে জুরাসিক এজে। আমাদের পাশ দিয়ে হেঁটে যাবে খতরনাক ইনডমিনাস রেক্স। আমি নিরাপদ কারণ আমি বা সেই ইনডমিনাস রেক্স কেউ রক্ত মাংসের নয়। বন্যতম ফ্যান্টাসিতে যা কিছু কল্পনা করা সম্ভব তাই গড়ে তোলা যাবে মেটাভার্সে। যেমন ডিজিটাল জমি (digital land), রিসর্ট বা শপিং মল। হালের খবর বলছে মেটাভার্স গ্রুপ নামের একটি কানাডীয় রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ‘ডিসেন্ট্রাল্যাণ্ড’ (Decentraland) নামে ৬০৯০ স্কোয়ার ফুটের ডিজিটাল জমি কিনেছে যার মূল্য প্রায় ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

In a press release, Metaverse said that its acquisition of Decentraland was equal to $2.43 million in cash during that time. Furthermore, the company announced that its newly-bought virtual real estate would be used to extend help for the digital fashion sector. (1)

বিশ্বের প্রথম সারির কোম্পানি H&M মেটাভার্সে ত্রিমাত্রিক দোকান খুলেছে। ক্রেতারা সেখানে পছন্দের হাল ফ্যাশনের কাপড় কিনতে পারেন। কেনাবেচা চলবে CEEK কয়েনের মাধ্যমে। সে এক আশ্চর্য ত্রিমাত্রিক অভিজ্ঞতা।  (2)

এই মেটাভার্স শব্দটি কিন্তু মোটেও নতুন নয়। কল্পবিজ্ঞান লেখক নীল স্টিফেনসন ১৯৯২ সালে মেটাভার্স শব্দটি প্রচলন করেন। তথ্য বলছে, বিভিন্ন ধরনের আজব সব ইলেকট্রনিক গ্যাজেট, ভিডিও গেম, ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি হেডসেট এইসব নিয়ে মেটাভার্স প্রযুক্তি ২০২০ সালে ৩৯ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করেছে। প্রত্যেক বছর মেটাভার্সের বাজার ৪০ শতাংশ লাফিয়ে বাড়বে এমনটাই দাবি করছে রিসার্চ ফার্ম ইন্সটিটিউটগুলি। মেটাভার্সে বিপুল লগ্নির কথা মাথায় রেখে মার্ক জাকারবার্গের নতুন চমক ফেসবুকের নাম বদল। নতুন নাম মেটা। অনলাইন গেমিং সেক্টরের বাড়বাড়ন্তে ভারতের দিকে পাশ ফিরেছেন জাকারবার্গ। ভারতে মেটাভার্সের লাভজনক বাজারের দিকে তাকিয়ে Fuel for India 2021 জাকারবার্গ বলেছেন,

I’m really excited about the role that India will play in building this future(metaverse) and that’s because India’s talent pool, the engineers, developers and creators, and your whole vibrant startup ecosystem are playing a huge role in shaping the future — really, we already are here. (3)

মেটাভার্স ডিজিটাল ল্যান্ড

 পিছিয়ে নেই মাইক্রোসফট, গুগল, অ্যাপেল। ভেনচার ক্যাপিটালিস্ট ম্যাথিউ বলের কথায়,

Most companies now see that the metaverse is around the corner. The narrative is a little ahead of the reality of these technologies, but this is a response to the enormity of the opportunity. (4)

এই মুহূর্তে মেটাভার্সের জগতে বুঁদ হয়ে আছে মূলত বাচ্চারা। প্যান্ডেমিকের জেরে তাদের সময় কেটেছে ভিডিও গেমের ফ্যান্টাস্টিক ভার্চুয়াল জগতে। ঘরবন্দী অনলাইন শিক্ষায় ফুলে ফেঁপে উঠেছে তাদের ভার্চুয়াল সামাজিকতা। এই কারণেই অন্যতম শ্রেষ্ঠ দুটি গেমিং কোম্পানি (Gaming Company)  রোব্লক্স ( Roblox) এবং এপিক গেমসের (epic games) 

তৈরি করা মেটাভার্সে বাচ্চারাই হল মূলত বিপুল মুনাফার চাবিকাঠি। মুনাফার হার আরও বাড়াতে বয়স্কদের আকর্ষণ করার কাজে হাত লাগিয়েছে এই সংস্থাগুলি। বিপুল টাকা খরচা করে লাইভ স্পোর্টিং ইভেন্ট এবং ডিজিটাল মিউসিকাল কনসার্ট আয়োজন করছে যাতে বাড়িতে বসেই প্রিয় শিল্পীর গান উপভোগ করে নেওয়া যায় ভার্চুয়াল দর্শকের আসনে বসে। মেটাভার্সের ভার্চুয়াল জগতে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মনোযোগ আকর্ষণের কথা বলতে গিয়ে  CNBC.com -এ প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে স্টিভ কোচ বলেছেন,

When a video game company only your kids have heard of goes public at a $38 billion valuation, you pay attention.  When Microsoft’s CEO drops the phrase “metaverse economies” on a quarterly earnings call, you pay attention. When Mark Zuckerberg says he’s going to spend $10 billion to create a new kind of virtual reality internet, you pay attention. (Oh, and his company has a new name too: Meta.) (5)

মিলিয়ন বিলিয়ন ডলার শব্দগুলো শুনতে বেশ রোমাঞ্চকর। গায়ে শিহরণ জাগায়। এই অনিশ্চিত অসহ্য একঘেয়ে দিনকালে মিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের পেছনে ছুটে বেড়ানো এক কথায় রথ দেখা কলা বেচা দুটোই। আকাঙ্ক্ষার ভার্চুয়াল বাস্তবায়ন এবং অর্থ উপার্জন। বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গের মতো সফল ধনকুবেররা যখন সবুজ সংকেত দিয়েছেন জীবনের সমস্ত কিছু নিয়ে সপরিবারে এই জগতে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধা কোথায়। কী নেই মেটাভার্সে!  পশু-পাখি, গাছ-পালা-অরণ্য, কীট-পতঙ্গ, পাহাড়-পর্বত, পুকুর-খাল-বিল-জলাশয়-নদী-সমুদ্র তো বটেই এমনকি বহু আলোকবর্ষ দূরের অচেনা গ্যালাক্সির নবতম গ্রহটিতেও ঝটিকা সফর করা যাবে বাড়ির আরামকুর্সিতে বসেই।  ইন্টারনেটে ভিডিও গেম খেলা যায় কিন্তু মেটাভার্সে গেমের ভিতরে আমি নিজেই একজন দক্ষ খেলোয়াড়। ইন্টারনেটে জুপিটার দেখেছি, সুপারম্যান দেখেছি কিন্তু মেটাভার্সে আমি নিজেই হতে পারি জুপিটারে দু একর জমির মালিক। সুপারম্যানের মতো অতিলৌকিক ক্ষমতায় পারদর্শী।

মেটাভার্সের দুনিয়ায়া জলবায়ু সঙ্কট নেই, অর্থনৈতিক বৈষম্য নেই। নেই বিজ্ঞাপনে সেলেব্রিটির প্রোরচনায় অনলাইন ফাটকা খেলে সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়া মানুষের হাহাকার। সেখানে সবই সুন্দর কারণ কল্পনায় স্বর্গলাভও সম্ভব।

 সত্যিকারের প্রকৃতি থেকে ক্রমশ দূরে সরতে থাকা আজকের দিনের সামগ্রিক  আন্তর্জাতিক জনমানস, জনযাপন এবং জাকারবার্গ বিল গেটস সমগোত্রীয় মানুষদের বাজারমুখি দাপটের কথা বিচার করলে অ্যাভাটার নামের ভার্চুয়াল প্রতিলিপিতে টইটম্বুর  মেটাভার্সকে উপেক্ষা করা মোটেই সহজ কাজ নয়, ছদ্মবেশে সেই দুনিয়া যতই হোক অমানবিক, অপ্রাকৃতিক। 

তথ্যসূত্র

  1. https://www-techtimes-com.cdn.ampproject.org/v/s/www.tetechtimeschtimes.com/amp/articles/268545/20211126/metaverse-group-buys-digital-land-decentraland-whopping-2-43-million.htm?amp_js_v=a6&amp_gsa=1&usqp=mq331AQKKAFQArABIIACAw%3D%3D#aoh=16412837736197&referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com&amp_tf=From%20%251%24s&ampshare=https%3A%2F%2Fwww.techtimes.com%2Farticles%2F268545%2F20211126%2Fmetaverse-group-buys-digital-land-decentraland-whopping-2-43-million.htm
  2. https://m-economictimes-com.cdn.ampproject.org/v/s/m.economictimes.com/markets/cryptocurrency/hm-opens-3d-store-in-metaverse-heres-how-you-can-buy-clothes-from-it/amp_articleshow/88666192.cms?amp_gsa=1&amp_js_v=a6&usqp=mq331AQIKAGwASCAAgM%3D#amp_tf=From%20%251%24s&aoh=16412638677086&csi=1&referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com&ampshare=https%3A%2F%2Fm.economictimes.com%2Fmarkets%2Fcryptocurrency%2Fhm-opens-3d-store-in-metaverse-heres-how-you-can-buy-clothes-from-it%2Farticleshow%2F88666192.cms
  3. https://m-timesofindia-com.cdn.ampproject.org/v/s/m.timesofindia.com/business/india-business/india-to-be-at-core-of-metaverse/amp_articleshow/88309480.cms?amp_js_v=a6&amp_gsa=1&usqp=mq331AQKKAFQArABIIACAw%3D%3D#aoh=16412937255751&csi=1&referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com&amp_tf=From%20%251%24s
  • https://www-nytimes-com.cdn.ampproject.org/v/s/www.nytimes.com/2021/12/30/technology/metaverse-virtual-reality-big-tech.amp.html?amp_js_v=a6&amp_gsa=1&usqp=mq331AQKKAFQArABIIACAw%3D%3D#aoh=16412918595506&referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com&amp_tf=From%20%251%24s&ampshare=https%3A%2F%2Fwww.nytimes.com%2F2021%2F12%2F30%2Ftechnology%2Fmetaverse-virtual-reality-big-tech.html

https://www-cnbc-com.cdn.ampproject.org/v/s/www.cnbc.com/amp/2021/12/22/here-are-the-companies-building-the-metaverse-meta-roblox-epic.html?amp_js_v=a6&amp_gsa=1&usqp=mq331AQKKAFQArABIIACAw%3D%3D#aoh=16413001869342&referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com&amp_tf=From%20%251%24s&ampshare=https%3A%2F%2Fwww.cnbc.com%2F2021%2F12%2F22%2Fhere-are-the-companies-building-the-metaverse-meta-roblox-epic.html

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top