Artificial Intelligence (Part II) – Bibek Sen

পোস্টটি দেখেছেন: 25 এ আই ও ইউ অ্যান আই ২ অদূর ভবিষ্যতে বা দূর ভবিষ্যতে রোবট পৃথিবী দখল করে নেবে এমন কথা হকিং বা বিল গেটস বল্লেও আমি বিশ্বাস করি না। যা বিশ্বাস করি তা হল ধনতন্ত্র আর এ আই সম্মিলিত হয়ে এক ভয়ানক বিপর্যয় ডেকে আনবে। ব্রিটিশ শিল্পবিপ্লবের কিছু আগে থেকেই পরপর অনেকগুলো আবিষ্কার একএক […]

এ আই ও ইউ অ্যান আই ২

অদূর ভবিষ্যতে বা দূর ভবিষ্যতে রোবট পৃথিবী দখল করে নেবে এমন কথা হকিং বা বিল গেটস বল্লেও আমি বিশ্বাস করি না। যা বিশ্বাস করি তা হল ধনতন্ত্র আর এ আই সম্মিলিত হয়ে এক ভয়ানক বিপর্যয় ডেকে আনবে।
ব্রিটিশ শিল্পবিপ্লবের কিছু আগে থেকেই পরপর অনেকগুলো আবিষ্কার একএক করে বস্ত্রশিল্প, ইস্পাতশিল্প, পরিবহনশিল্পকে আমূল বদলে দিয়েছিল। একদিকে তা যেমন উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছিল, অন্যদিকে ভেঙ্গে দিয়েছিল প্রাচীন জগত। কেড়ে নিয়েছিল অনেক মানুষের রুটি, নষ্ট করে দিয়েছিল স্থায়িত্ব। তাও আমরা শিল্পের পক্ষেই কথা বলি। আমাদের ধারণা উন্নত প্রযুক্তির পক্ষে কথা বলা সভ্যতার লক্ষণ। কাজেই তাঁতের বিনষ্টিকরণ ভালই, মিলের উৎপাদন যেহেতু বেশী, ঘোড়ার গাড়ি পারেনা কলের মেশিনের কাছে, ভালই, কেননা গতি বাড়ে, এমন কি খোদ মার্ক্স বলে গেছে আধুনিক যন্ত্রের বিকাশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ইংল্যান্ডের তাঁতীরা ভুল করেছে, সভ্যতার চাকা পেছনে ঘোরে না। বাণিজ্যে ব্যাংকে কম্পিউটার আসার সময় মধ্যবিত্ত একটা চাপা বিরোধিতা করেছিল, সারা পৃথিবী জুড়েই, তার কাজ চলে যেতে পারে ভেবে। পরে মেনে নেয়। তার কাজ ও প্রভাব কম্পিউটার কমায়নি, বাড়িয়েছিল। কিন্তু এ আই এবারে বিপুল একটা সম্ভাবনা নিয়ে আসছে যা প্রযুক্তির প্রগতি, আর শুধু শ্রমিকের প্রয়োজন নয়, মধ্যবর্তী শাদা কলার কর্মীর প্রয়োজন সে কমিয়ে দেবে।
আধুনিক শিল্পক্ষেত্রে কিছু পরিদর্শন করে আমার নিজের মনে হয়ে হয়েছে সম্পূর্ণ অটোমেটেড ফার্মা কোম্পানি অনেক বেশী নিরাপদ ওষুধ বানায়, নিশ্চয়ই একই ভাবে প্রতিটি শিল্পে এ আই অনেক নিখুঁত আর নিরাপদ ব্যবস্থার জন্ম দিতে পারে, কৃষিতে, খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণে, বস্ত্রশিল্পে, রাসায়নিক শিল্পে এ আই অবশ্যম্ভাবী। একই সাথে ব্যাংক আর বীমা, চিকিৎসা আর প্রশাসনে ৫০-৭০% কর্মী ও বিশেষজ্ঞ অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাবে এ আইয়ের প্রয়োগে। আমি নিজে গত পাঁচ বছর যেখানে যেখানে নেটে বসে কাজ করা সম্ভব করেছি, বিদ্যূতের বিল থেকে ট্রেনের টিকিট কাটা, কেনাকাটা। কাজেই একটা বিপুল পরিমাণ কর্মী আর প্রয়োজন হবে না পরিষেবাক্ষেত্রেও। প্রয়োজন হবে না নানা জাতের টেকনিশিয়ান, এমন কি বিশেষজ্ঞ, সাধারণ ডাক্তার আর থাকবে না, সব গ্রাস করে নেবে এ আই। কাজ যাবে কম্পিউটার ক্ষেত্রেও, অপারেটার আর নিচুতলার ডেটা ম্যানেজার, প্রোগ্রামারদের ৭০-৮০% আর দশ বছর পর লাগবে না বলছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এ আই বিশেষজ্ঞ। চেষ্টা চলছে এখন এমন প্রোগ্রাম বানাবার যা নিজেই সফল প্রোগ্রাম লিখতে পারে। একটি মানব মস্তিষ্ক বানাবার চেষ্টা চলছে সিমুলেশানে। এই কঠিন কাজ হওয়ার আগেই তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষক, বীমার এজেন্ট, শেয়ার ব্রোকার, নানা অ্যানালিস্ট অনেকের কাজ কমিয়ে দেবে। আগামী কুড়ি বছরে ৫০% ত বটেই।

এ আইয়ের পূর্ণ বিকাশে প্রতিরক্ষাও অটোমেশানে চলে যেতে পারে। তখন সামান্য ত্রুটি আর মানুষ যন্ত্রে ভুল বোঝাবুঝি থেকে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

যারা ভাবছেন এসব ডিস্টোপিয়া তাদের একটা ছোট্ট গল্প বলি। আমার এক সময়ের রাজনৈতিক গুরু ড রায় গত পঁচিশ বছর গবেষণা করেন এ আই নিয়ে। ডিপব্লু দাবা ও আবহাওয়া গবেষণাতেও ছিলেন। ২০০০ সালে পুজোয় দুজনে আড্ডা মারছি। দাদা জানালেন কয়েক মাস আগেই ৭*৭ গুটির দাবার সম্পূর্ণ সমাধান তারা করেছেন, মন্ত্রী আর একটা ঘোড়া না থাকলে মানুষ কম্পিউটারকে দাবায় হারাতে পারবে না। আমি এখবর কোন কাগজে দেখিনি। ২০১৬ তে একটি এ আই প্রবন্ধে স্বীকার করা হয় যে একাজ করা হয়েছে, ২০১২ সালে।
অর্থাৎ, যা যা হতে পারে বলে ভয় পাচ্ছেন সেসবই হয়ে রয়েছে, খালি বাজারে আসার অপেক্ষা।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top