আইনস্টাইন থেকে হকিং:মহাকাশ চর্চা ও ঈশ্বর ভাবনা

বিজ্ঞানীদের চেতনায় ঈশ্বর কীরূপে বিরাজ করে। ভাববাদী জগতের মানুষদের দাবি –“বিজ্ঞান তো সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না, সেখানে সর্বশক্তিমান (!) ঈশ্বরই ভরসা। আবার কোয়ান্টাম বলবিদ্যার অনিশ্চয়তার তত্ত্ব বলে: "এটাও হয়, ওটাও হয়”।

সন্তোষ সেন

বিজ্ঞান ও সমাজ বিকাশের ইতিহাসে একমাত্র ধ্রুব সত্য হল পরিবর্তন ও আপেক্ষিকতা, এখানে পরম বা চরম (absolute) বলে কিছু হয় না। সবকিছুই গতির অধীনে। মানব মস্তিষ্কের ক্রমবিকাশের হাত ধরে গুহামানব থেকে আধুনিক যুগের মানুষ এবং সমাজ পরিবর্তন – সবকিছুই নিরন্তর আরও উন্নতস্তরে পৌঁছচ্ছে গতি ও পরিবর্তনের নিয়ম মেনে।

নিউটনীয় বিজ্ঞান থেকে ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল, ম্যাক্স প্লাঙ্ক, নিলস বোর, আইনস্টাইন, স্টিফেন হকিংদের ভাবনাচিন্তা সূত্র ও আবিষ্কারের ফলস্বরূপ বিজ্ঞান তার মায়াজাল ও ধোঁয়াশা ভেদ করে গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে, সূর্য থেকে নক্ষত্রমন্ডলী, পৃথিবী-চাঁদের সীমানা পেরিয়ে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের পথে প্রান্তরে চির প্রবাহমান। বিজ্ঞানের চিরন্তন গতিকে পাথেয় করেই হকিংয়ের মহাকাশ ভাবনার জগতে বিচরণ করতে হবে। অসীম বিপুলা বিশাল মহাবিশ্বের ঠিক কতটুকু বিজ্ঞানীদের করায়ত্ত তা স্থান পাবে এই আলোচনার বৃত্তে। আর এখান থেকেই এক অমোঘ প্রশ্ন ধেয়ে আসবে – বিজ্ঞান কি সবকিছুর উত্তর দিতে পারছে, নাকি এসবের উত্তর পেতে বিজ্ঞানীদের সর্বশক্তিমান ঈশ্বরে বিশ্বাসী হতে হবে, আইনস্টাইন – পেনরোজ – হকিং প্রমুখ প্রখ্যাত বিজ্ঞানীরা কি ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন, করলে তাঁদের ঈশ্বর-চিন্তা কেমন ছিল? এইসব যুক্তি-তর্ক ও বিজ্ঞান ভাবনাকে এই নিবন্ধে সংক্ষেপে প্রথিত করার চেষ্টা রইল।

নিউটন ও আইনস্টাইনের মহাকাশ ভাবনা

নিউটনের গতিসূত্র এবং অভিকর্ষ বল পরিমাপের সূত্র দিয়ে মহাজাগতিক ক্ষেত্রে অংকের হিসেব-নিকেশ এক রকম মিলে যায়। কিন্তু নিউটন বস্তুজগতকে নিরেট বস্তু হিসেবে হাজির করে যান্ত্রিক বস্তুবাদের খপ্পরে পড়লেন। তাঁর তত্ত্বে বস্তুর ভর এবং সময় চূড়ান্তভাবে পরম, কোনকিছুতেই যার কোন হেলদোল নেই এবং স্পেস বা স্থান নিষ্ক্রিয়। গোল বাঁধল এখানেই। ঈশ্বর ভাবনা গেঁড়ে বসতে পেল নতুন করে। কারণ, ঈশ্বর মানেই পরম এবং সর্বশক্তিমান, যার ইচ্ছেতে বস্তুজগতের সৃষ্টি-লয়-বিনাশ।

আইনস্টাইন বললেন –বস্তুর ভর শক্তিতে এবং শক্তি ভরে পরিবর্তিত হয় নিত্য, কণা পদার্থবিদ্যায় যা প্রমাণিত সত্য। তাঁর আপেক্ষিকতা তত্ত্বের সাহায্যে আইনস্টাইন স্থান-কালকে নতুনভাবে হাজির করলেন। তিনি বললেন –সময়ও পরিবর্তনশীল এবং যেকোনো ভারি বস্তুর চারপাশের স্থান-কাল দুমড়ে মুচড়ে বক্রতার সৃষ্টি করে। স্থানকালের এই বক্রতার কারণেই গ্রহগুলো নির্দিষ্ট কক্ষপথে সূর্যের চারদিকে ঘুরে চলেছে অনবরত। এই বক্রতলের মধ্যে দিয়ে আলো আর সরলরেখায় চলতে পারে না। আমাদের সূর্যের কয়েকগুণ ভর বিশিষ্ট কোন নক্ষত্রের মৃত্যুর পর তৈরি হওয়া ব্ল্যাকহোল তার চারপাশের স্থানকালকে এতটাই বাঁকিয়ে দেয় যে, আলো এখান থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারে না। সবকিছুকে গিলে ফেলে কৃষ্ণগহ্বর তার পেটে সব ইনফরমেশন স্টোর করে রাখে। ‘সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের’ সাহায্যে কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্ব ব্যাখ্যা করার পাশাপাশি আইনস্টাইন ‘অভিকর্ষজ তরঙ্গ’-এর অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হলেন।

দুটো অতি ভারী কৃষ্ণগহর বা নিউট্রন স্টারের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে সৃষ্টি হওয়া অভিকর্ষ তরঙ্গ মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে আলোর গতিবেগে। যদিও অভিকর্ষ তরঙ্গের শনাক্তকরণ সম্পর্কে আইনস্টাইন আশাবাদী ছিলেন না, কিন্তু বিজ্ঞান- প্রযুক্তির বিকাশ বিজ্ঞানীদের ভাবনাচিন্তাকেও উলোটপালোট করে দেয়। তাই আমরা দেখলাম ২০১৮ সালে তিনজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী আধুনিক যুগের অতি উন্নত যন্ত্র (LIGO বা লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজার্ভার)’-এর সাহায্যে ৩০ কোটি বছর আগে তৈরি হওয়া অভিকর্ষ তরঙ্গকে নিশ্চিতরূপে শনাক্ত করে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হলেন।

আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা সূত্রের ধারাবাহিকতায় কৃষ্ণগহ্বরের বিকিরণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে স্বনামধন্য জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং এবং রজার পেনরোজ ‘কোয়ান্টাম অভিকর্ষ তত্ত্ব’ (Quantum Gravitational Theory) নিয়ে গভীরে চর্চা শুরু করেন। প্রগাঢ় বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ এই দুই বিজ্ঞানীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক হলেও তাঁদের মধ্যে যে মতবিরোধ ও বিতর্ক জারি ছিল দীর্ঘকাল ধরে, তা এক ঝলকে দেখা যাক।

স্থান কালের বক্রতা

মহাবিশ্বের ভবিষ্যত প্রসঙ্গে মহা বিতর্ক

স্টিফেন হকিং ও রজার পেনরোজের মতবিরোধের মূল কারণ –কৃষ্ণবহরের মধ্যে জমা থাকা ইনফরমেশন ভবিষ্যৎ কোন খাতে বয় এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অন্তিম পর্বের সাথে সূচনা লগ্নের এত ফারাক ঘটছে কেন, এই প্রশ্নকে ঘিরে। ১৯৭৩ সালে হকিং একটি তত্ত্ব সামনে আনলেন –কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার কারণেই কৃষ্ণগহ্বর থেকে নানা পার্টিকেল ও বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ে। এইভাবে বিকিরণ করতে করতে একটি ব্ল্যাক হোল তার সমস্ত ভর হারিয়ে একসময় জাস্ট ভ্যানিস হয়ে যাবে কালের গর্ভে। যদিও দুই জ্যোতির্বিজ্ঞানীই বিশ্বাস করতেন যে, বিকিরণের কারণে এই বিপুল ইনফরমেশনের একটা অংশ মহাবিশ্বে হারিয়ে যায়। গোল বাঁধল অন্য জায়গায়। হকিং এর মতে –কৃষ্ণগহ্বর থেকে যা হারিয়ে যায়, তা একেবারেই চলে যায়, আর ফেরত আসে না। এই প্রক্রিয়ায় একটা সময় কৃষ্ণগহ্বরের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে।

উল্টোদিকে তাঁর বন্ধু পেনরোজের বক্তব্য – যা হারিয়ে যাচ্ছে তা আবার সমতায় ফিরে আসে স্থান–কালের বক্রতা নতুন নতুন ইনফরমেশন টেনে নেওয়ার ফলে। তাঁর মতে কৃষ্ণ গহ্বরের অস্তিত্ব বিলোপ হবে না কোনদিনই। এই দ্বন্দ্বের সমাধান দুই বিজ্ঞানীর চোখে দুই রকম ভাবে ধরা পড়ে। হকিং মনে করেন যে, কৃষ্ণ গহ্বরের গঠন, চরিত্র ও বিকিরণ ব্যাখ্যা করতে প্রয়োজন ভবিষ্যতের নতুন ‘কোয়ান্টাম অভিকর্ষ তত্ত্বের’। কিন্তু পেনরোজের মতে সময়-স্কেলে কণা পদার্থবিদ্যার বুনিয়াদি বলগুলি সময়-সমসত্ত্ব (টাইম-সিমেট্রি)। অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটাকে পিছনে ঘোরালেও তার চরিত্রে কোন পরিবর্তন ঘটে না। কিন্তু কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটি সমসত্ত্বতার নীতিকে মেনে চলে না। তিনি যুক্তি সাজালেন –শিশু মহাবিশ্বের শুরুর কালে শক্তির বিন্যাস ছিল সমসত্ত্ব, কিন্তু বিনাশের পর্বে তা সম্পূর্ণরূপে অগোছালো বা এলোমেলো হয়ে পড়বে।

এই বৈপরীত্যকে ব্যাখ্যা করতে পারে অসমসত্ত্বার নীতি। এই নীতির সমর্থনে পেনরোজ ‘Weyl curvature hypothesis’ কে সামনে আনলেন। আইনস্টাইনের মতে বস্তুর উপস্থিতির কারণেই স্থান বেঁকেচুরে যায়। কিন্তু পেনরোজের তত্ত্বানুসারে অভিকর্ষজ তরঙ্গ ও কৃষ্ণগহ্বর মহাশূন্যের কোন ফাঁকা অঞ্চলকেও বাঁকিয়ে দিতে পারে। তাঁর মতে – সূচনাপর্বে এই বক্রতা ছিল না বললেই চলে, কিন্তু মহাবিশ্বের মৃত্যুর সময়কালে অসংখ্য পরিমাণে কৃষ্ণগহ্বরের উপস্থিতি বক্রতাকে এতটাই বাড়িয়ে দেবে যে, সবকিছু হিসেব-নিকেশের বাইরে গিয়ে এলোমেলো হয়ে পড়বে। এভাবেই শুরু ও শেষের মধ্যে বৈপরীত্যকে তিনি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। মহাবিশ্ব সৃষ্টিকালের মহাবিস্ফোরণ (বিগ-ব্যাং) এবং সমাপ্তির মহাসংকোচনের (বিগ-ক্রাঞ্চ) চরিত্র ও ধরন আলাদা –এই যুক্তি মেনে নিয়েও হকিং তাঁর বন্ধু পেনরোজের তত্ত্বায়নের বিরোধিতা করলেন। তিনি যুক্তি সাজালেন –প্রকৃতি অসমসত্ত্বতার তত্ত্ব মেনে নিতে পারে না। সৃষ্টি, বেড়ে ওঠা, সংকোচন, লয়: এই বিবর্তন প্রক্রিয়াটি পূর্ব নির্ধারিত বা স্থিরীকৃত (প্রোগ্রাম্ড)। হকিংয়ের যুক্তি –প্রকৃতির মধ্যেও এক ধরনের ডেমোক্রেসি বিরাজ করে, ব্রহ্মান্ডের কোন অঞ্চলই বিশেষ বা স্পেশাল নয়। সুতরাং মহাবিশ্বের কোন বাউন্ডারি বা সীমানা থাকতে পারে না।

দুই অন্তরঙ্গ বন্ধুর মধ্যে এই বিতর্কের অবসান হলো না। বরং বলা যায়, কোয়ান্টাম বলবিদ্যার অনিশ্চয়তার তত্ত্বানুসারে অদ্ভুতুড়ে কার্যকলাপ নিয়ে আইনস্টাইন ও নীলস বোর-এর ঐতিহাসিক বিতর্কের জালকে পেনরোজ ছড়িয়ে দিলেন মহাবিশ্বের ধূসর প্রান্তরে। সুস্থ বিতর্ক, পরীক্ষা নিরীক্ষা চলুক সব প্রশ্নের উত্তর জানতে, জ্ঞানের শিখাকে প্রজ্বলিত রাখতে। বিজ্ঞানের নিয়মনীতি মেনে কার্যকারণ সম্পর্কের সঠিক ব্যাখ্যা একদিন না একদিন সামনে আসবেই। এটাই বিজ্ঞান, এটাই বিবর্তন, এটাই আপেক্ষিকতা। প্রকৃতির জগতে স্থির-স্থবির- অচল ও পরম বলে তো কিছু হতে পারেনা।

প্রসারমান ব্রহ্মাণ্ডের ইতি কোথায়

জ্যোতির্বিজ্ঞানের জগতে সর্বোচ্চ আলোচিত ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিষয়টি হল –বাড়তে বাড়তে বৃদ্ধির সর্বোচ্চ পর্যায়ে অভিকর্ষের টানে ব্রহ্মাণ্ড কি একসময় মহাসংকোচনের পরে আবারো চুপসে যাবে কালের গর্ভে, নাকি প্রসারণ চলতেই থাকবে সময়ের সাথে সাথে? মানব শরীর বার্ধক্যের সীমায় পৌঁছে যেমন আবার কুঁকড়ে যায়, মহাবিশ্বও সেরকমভাবেই চুপসে যাবে ফোলানো বেলুনের মত – এই ছিল স্টিফেন হকিংয়ের যুক্তি। নিশ্চিত করে সংকোচনের কথা না বললেও তাঁর বিশ্ব বিখ্যাত বই ‘অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম’-এ কিন্তু এরকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন স্টিফেন হকিং। কিন্তু বাস্তবে ঘটছে ঠিক এর উল্টো। মহা বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে ১৩৮০ কোটি বছর আগে শিশু মহাবিশ্বের সৃষ্টির উষালগ্ন থেকেই তা ক্রমশ বাড়ছে, চুপসে যাওয়ার কোন ইঙ্গিত এখনো পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না।

হাবল স্পেস টেলিস্কোপ, জেমস ওয়েভ টেলিস্কোপ, ইত্যাদির মতো উন্নত মানের দূরবীনের সাহায্যে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন নক্ষত্রপুঞ্জের যে তথ্য মিলছে তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, ব্রহ্মাণ্ড ক্রমশ স্ফীত হচ্ছে এবং আশ্চর্যের বিষয়: এই প্রসারণের বেগ উত্তরোত্তর বাড়ছে। অর্থাৎ গ্রহ, নক্ষত্র, কৃষ্ণগহ্বর সহ সমস্ত মহাজগতিক বস্তু ক্রমশ বেগ বাড়িয়ে নিজেদের থেকে দূরে আরো দূরে সরে সরে যাচ্ছে। কয়েকশ’ কোটি আলোকবর্ষ দূরের নক্ষত্রপুঞ্জের তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে –ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পর্ব থেকে মাঝামাঝি সময়ে এসে এর প্রসার বা ছড়িয়ে পড়ার গতি বেড়েছে। মহাবিশ্বের প্রসারিত হওয়ার এই ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করা হয় নক্ষত্রমন্ডলী থেকে ধেয়ে আসা আলোর বর্ণালী বিশ্লেষণ করে। দেখা যাচ্ছে –নক্ষত্র থেকে আসা আলো লাল তরঙ্গ-দৈর্ঘ্যের দিকে সরে যাচ্ছে, যাকে বলা হয় রেড-শিফ্ট। একটি আলোক বর্ণালী লাল তরঙ্গের দিকে সরে যাওয়া মানে তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য বাড়ছে, ফলে নিশ্চিতভাবে বলা যায় ‘ডপলার ইফেক্ট’ অনুসারে সে আরও দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু সরতে সরতে সে যাচ্ছে কোথায়? নিশ্চয় কোন এক অজানা স্থান-কাল সাদরে আমন্ত্রণ করছে প্রসারমাণ ব্রহ্মাণ্ডকে। তাহলে কি মহাবিশ্বের কোন সীমা পরিসীমা নেই?

জেমস্ ওয়েব টেলিস্কোপের পাঠানো প্রথম ছবি।

সাম্প্রতিক কালের জ্যোতির্বিদদের যুক্তি –সূচনা পর্বে যে পরিমাণ শক্তি মহাকাশে ছড়িয়ে ছিল তা ভরে রূপান্তরিত হয়ে গ্রহ নক্ষত্রের সৃষ্টি হয়েছিল, ফলে মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ কমেছে। সেদিক থেকে বিচার করলে স্ফীত হওয়ার গতিবেগ কমে আসারই কথা। আর এই যুক্তির উপর ভর করেই ধরে নেওয়া হয়েছিল –স্ফীতি সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছালে মহাকর্ষ বলের প্রভাবে ফের সংকোচন শুরু হবে এবং ছোট হতে থাকবে ব্রহ্মাণ্ড। বর্তমান পর্যবেক্ষণকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলা হচ্ছে –মহাবিশ্বে এমন কিছু আছে, যার ফলে মহাজাগতিক বস্তুদের মধ্যে আকর্ষণের পরিবর্তে বিকর্ষণ বল কাজ করছে, ফলে সে ক্রমশঃ স্ফীত হচ্ছে। কি সেই ‘এমন কিছু’; তা কি রহস্যাবৃত ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি?

ডার্ক ম্যাটারডার্ক এনার্জি বিষম বস্তু

সাম্প্রতিক কালের সমস্ত মহাকাশ গবেষণা লব্ধ পর্যবেক্ষণ থেকে বিজ্ঞানীদের অনুমান –সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মাত্র ৫ শতাংশ বাহ্যিক বস্তু দিয়ে তৈরি, যার আবার একটা ক্ষুদ্রাংশ বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিগোচর। বাকি ৯৫ শতাংশই অজানা বস্তু ও শক্তি দিয়ে পরিপূর্ণ, যাকে বলা হচ্ছে ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জি। এই অজানা ভর ও শক্তির একটি যুতসই বাংলা প্রতিশব্দ আছে – ‘তমোপদার্থ’। বিজ্ঞানীরা কিভাবে এই ধারণায় উপনীত হলেন?

মহাকর্ষের প্রভাবে তারাগুলো ছায়াপথের কেন্দ্রের চারদিকে আবর্তন করে চলেছে, যা অনুসরণ করে প্রকৃত ভর নির্ণয় করা হয় এবং গ্যাসপিণ্ডের নিজস্ব ভর যোগ করে সমগ্র ছায়াপথের দৃশ্যমান উজ্জ্বল পদার্থের ভর নির্ণয় করা যায়। এটা করতে গিয়েই বিজ্ঞানীদের চক্ষু চড়কগাছ। হিসেব বলছে –দৃশ্যমান ভরের চেয়ে প্রকৃত ভর অনেক অনেক বেশি। ১৯৩২-৩৩ সালে দুই জ্যোতির্বিজ্ঞানীর গবেষণায় এই ফারাকটি প্রথম সামনে আসে। এরপর তমোপদার্থের উপস্থিতির পক্ষে আরও অনেক ধরনের পর্যবেক্ষণমূলক প্রমাণ (মহাকর্ষীয় লেন্সিং, ছায়াপথের ঘূর্ণন বেগ, গ্যাসের তাপমাত্রার বণ্টন, ইত্যাদি) পাওয়া যেতে থাকে। যদিও অজ্ঞাত প্রকৃতির তমোপদার্থ তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ শোষন বা নিঃসরণ কোনটাই করে না, এরা এসব তরঙ্গের সাথে কোন ধরনের মিথস্ক্রিয়াই করে না, ফলতঃ দূরবীন দিয়ে সরাসরি দেখার কোন উপায় নেই, পুরোটাই কালো অন্ধকারে ঢাকা।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে: কোয়ান্টাম গ্র্যাভিটি দিয়ে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ব্রহ্মাণ্ডের একটা বড় অংশ অজানা বস্তু দিয়ে তৈরি। যদিও অন্য একটা অংশের মতে, মহাকর্ষের যে নীতির কারণে ডার্ক ম্যাটারের অস্তিত্বের কথা বলা হচ্ছে, স্বয়ং সেই নীতিকেই বিশেষ ক্ষেত্রে সংশোধন করে নিলেই ল্যাঠা চুকে যায়। যাই হোক এই অজানা অজ্ঞাত বস্তু ও শক্তির স্বরূপ সন্ধানে গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ জারি থাক। এক একটি অজানা তথ্যের সমাধান মানে আরও কোনো বৃহৎ প্রশ্নের সম্মুখীন হওয়া। অথচ আমরা পৃথিবীর ক্ষুদ্র গণ্ডিতে বসে ফসিল ফুয়েল পোড়ানো আর তার হাত ধরে প্রকৃতি পরিবেশের বিনস্টিকরণ ছাড়া অন্য কিছু ভাবতেই পারছি না।

বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা অজানা শক্তির সাথে বিশ্ব-প্রকৃতির সম্পর্ক কেমন সেই জ্ঞানকে বিস্তারিত ও বিকশিত করাই আজকের কাজ। প্রশ্ন, পরিপ্রশ্ন, উত্তর –এই নিরন্তর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমাদের ‘হায়ার সেলফ্’কে উচ্চতর জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। বিজ্ঞানীরা যত জানবেন, সমস্যাগুলোর যত দ্রুত সমাধান হবে, তত বেশি সে স্বাধীন হবে, নিত্য নতুন বস্তু জগতের বিকাশের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞান ভাবনা আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। এবং খুব সঙ্গত কারণেই ঈশ্বর ভাবনা থেকে বিজ্ঞানের দূরত্ব আরও দ্রুত বেড়ে যাবে।

বিজ্ঞানীদের ঈশ্বর ভাবনা

প্রথমেই দেখা যাক –বিজ্ঞানীদের মধ্যে ঈশ্বর ভাবনার বস্তুগত ভিতটা কী? সমাজ-বিজ্ঞানের ইতিহাসে এই ঈশ্বরের ধারণা এল কী করে? মানুষের জন্মের প্রথম থেকে সমাজ বিকাশের একটা বড় অংশ জুড়ে সমাজে ঈশ্বর ভাবনা কিন্তু ছিল না। আদিম যুগে বন্যা, খরা, ঝড়-ঝঞ্ঝা, সূর্যগ্রহণ ও নানান প্রাকৃতিক দুর্বিপাকের কারণ খুঁজতে মানুষের কল্পনায় ধরা পড়েছিল বরুণ, সূর্য, ইন্দ্র, ইত্যাদির মতো নানান দেবতা। আর সেই দেবতারা রুষ্ট হলে তাদের তুষ্ট করতে পাহাড়, গাছ, পাথরের মতো প্রকৃতির নানান জিনিষকে পুজো করা বা যাদু বিদ্যার আশ্রয় নিত, অর্থাৎ প্রকৃতির রুদ্ররোষ থেকে নিজেদের বাঁচাতে প্রকৃতির অন্য আর এক রূপকেই পূজো করত সেই সময়কার মানুষ। এবং সেই পুজোর উপকরণ বা পদ্ধতিও আজকের মতো এত উগ্র ও বাজারি ছিল না।

সমাজ বিকাশের ধারায় পুঁজিবাদী যুগে পণ্য উৎপাদন ও তা বিক্রি করে অর্থ (money) ফেরৎ নিয়ে আসার প্রক্রিয়ায় বিনিময় মূল্যের মধ্য দিয়ে অর্থ বিমূর্ত হয়ে যায়। যে অর্থ শুধু বাজার নয়, নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের মস্তিষ্ক, চেতনাকেও। এমনকি বিজ্ঞানও আজ এই অর্থ-পুঁজির দাস হয়ে পড়েছে অনেকাংশেই (এই বিষয়টি বিশদে আলোচনার দাবি রাখে, সেই আলোচনা আপাতত মুলতুবি রাখলাম)। এই বিমূর্ততার প্রভাবে মানুষের চেতনায় দেবতার পরিবর্তে বিমূর্ত ঈশ্বর স্থান করে নিল পাকাপোক্ত ভাবে। অর্থাৎ মানুষ যে ঈশ্বরের জন্ম দিল, সেই বিমূর্ত ঈশ্বরই মানুষের চেতনা ও মস্তিষ্ককে শাসন করা শুরু করল। আর বিজ্ঞান কর্মী, বিজ্ঞানীরা তো এই সমাজেরই একটি অংশ। ফলে তাঁদের অনেকের চেতনাতেও ঈশ্বর ভাবনা কোনো না কোনো প্রভাব ফেলে। যদিও সমাজ সচেতন এক বড় অংশের বিজ্ঞানীদের কাছে ইশ্বরের থেকেও বৈজ্ঞানিক ধ্যানধারণা, যুক্তি, বিশ্লেষণ প্রধান বিষয় হিসেবেই বিবেচিত হয়। বিমূর্ত অর্থের হাত ধরে পরম শক্তিধর ঈশ্বরের ধারণা এসেছে বলেই পুঁজির এই রমরমা যুগেও আদি জনজাতি সহ গ্রামীণ মানুষের মননে ঈশ্বর চিন্তার থেকেও প্রকৃতি পূজা বা নানান লৌকিক দেবতা বেশি করে প্রাধান্য পায়।

এবার দেখা যাক বিজ্ঞানীদের চেতনায় ঈশ্বর কীরূপে বিরাজ করে। ভাববাদী জগতের মানুষদের দাবি –“বিজ্ঞান তো সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না, সেখানে সর্বশক্তিমান (!) ঈশ্বরই ভরসা। আবার কোয়ান্টাম বলবিদ্যার অনিশ্চয়তার তত্ত্ব বলে: “এটাও হয়, ওটাও হয়”। অর্থাৎ, সবকিছুই মানুষের চেতনা দিয়ে নির্ধারিত হয়। অথচ এই ভাববাদের ব্যাপারীরা ভুলে যান যে, আমি দেখি বা না দেখি, আমি ভাবি বা না ভাবি, আমি কল্পনার জাল বিস্তার না করলেও মহাবিশ্ব ছিল এবং আছে। পূর্ণিমার চাঁদ কবির চোখে ঝলসানো রুটি বা অন্য যা কিছুই হোক না কেন, কল্পনা নিরপেক্ষ ভাবেই সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকে চাঁদ স্বমহিমায় আকাশে বিরাজমান।

আসলে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার তত্ত্ব তো অনেক দূরের কথা, ভাববাদের প্রবক্তরা বিজ্ঞানের কার্য -কারণ সম্পর্ক সহ বিজ্ঞানের অ-আ-ক-খ টাই বোঝেন না, বোঝার চেষ্টাও করেন না। আর তাই কোয়ান্টাম তত্ত্বের গূঢ় অর্থ না বুঝেই ঈশ্বরের পক্ষে ওকালতি করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েন ভাববাদের সমর্থকরা। এবং যুক্তি সাজান এই বলে যে, “বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীরাই তো ঈশ্বরের কথা বলেন”। বাস্তবে বিজ্ঞানীরা ঈশ্বরকে কিভাবে দেখেন, তার কিছু নমুনা রাখি।

প্রসারমান মহাবিশ্ব

আইনস্টাইনের বহুল প্রচলিত উক্তি – “ভগবান বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সাথে পাশা খেলতে পারেন না”। কোয়ান্টাম বলবিদ্যার অনিশ্চয়তা সম্পর্কে বিরক্ত আইনস্টাইনের এই উক্তির মর্মার্থ বোঝা কি খুব কঠিন? পরবর্তী কালে তিনি বলছেন – “আমি জানতে চাই ঈশ্বরের পক্ষে কিভাবে এই মহাবিশ্ব তৈরি করা সম্ভব হলো”? তার মানে এই নয় যে, তিনি ধর্মীয় চিন্তা বা ঈশ্বর ভাবনায় জারিত ছিলেন। তিনি স্পষ্ট করে বলছেন – “ব্যক্তিগতভাবে ভগবানে বিশ্বাস আসলে একটি নৃতাত্ত্বিক ধারণা, যেটাকে আমি গুরুত্বই দিই না”। ভগবানে বিশ্বাস করেন কিনা জানতে চাইলে তাঁর সপাট উত্তর –”আমি স্পিনোজার ইশ্বরে বিশ্বাস করি”। তাহলে স্পিনোজার ঈশ্বর দর্শন কেমন ছিল? ডাচ দার্শনিক স্পিনোজা (১৬৩২-১৬৭৭) আসলে নৈসর্গিক প্রকৃতির অপার ছন্দবদ্ধতার নিয়মকেই ভগবান বলে বিশ্বাস করতেন। তাঁর এই ভগবান মানুষের সুখ-দুঃখ, ভুত-ভবিষ্যৎ, কর্মফল-ভাগ্যফল, জন্মান্তর কোন কিছুরই নিয়ন্ত্রক নন। তাই তিনি বলতে পারেন -“Nature can think as a whole”। আর এক জ্যোতির্বিজ্ঞানী পেনরোজের অবস্থান আরও স্পষ্ট – “প্রতিষ্ঠিত কোন ধর্মমতে আমি বিশ্বাস করি না। মহাবিশ্ব সৃষ্টির পিছনে কার্যকারণ ও একটা উদ্দেশ্য ঠিকই আছে, হঠাৎ করে কিছু একটা গজিয়ে ওঠেনি”।

এই নিবন্ধের অন্যতম নায়ক হকিংয়ের ঈশ্বর ভাবনা কেমন ছিল? ২০১০ সালে দোসরা সেপ্টেম্বর ‘লন্ডন টাইমস’ এ বড় বড় অক্ষরে ছাপা হলো –”ভগবান এই মহাবিশ্ব তৈরি করেননি”। বেস্ট সেলার ‘অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম’ বইয়ের শেষে তিনি লিখলেন –”আমরা যদি একটি সার্বিক তত্ত্ব আবিষ্কার করতে পারি, তাহলে সেটাই হবে বিজ্ঞানের চূড়ান্ত জয় এবং তখনই আমাদের কল্পিত ও রূপক (মেটাফর) ঈশ্বরের ‘মন’ বুঝতে পারব”। অন্যদিকে ‘হিগস-বোসন’ কণার আবিষ্কারক বিজ্ঞানী হিগস-এর বইয়ের নাম চমক বাড়ানোর জন্য প্রকাশক ‘গড পার্টিকেল’ করে দিলে স্বয়ং লেখক অস্বস্তির মধ্যে পড়ে যান, তিনি বিরক্তও হন। কারণ তিনি কোনো অর্থেই ভগবানের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন না।

মহাবিশ্বের বহুমাত্রিকতার ধারণাকে একত্রিত করে গঠিত ‘M-theory’ কে বলা হয় ‘থিওরি অফ এভরিথিং’; যে তত্ত্বের মতে আমাদের জ্ঞাত মহাবিশ্বের বাইরে আরও অনেক মহাবিশ্ব আছে। এই প্রসঙ্গে হকিংয়ের উক্তিটি প্রণিধানযোগ্য – “এই তত্ত্ব আরও অনেক মহাবিশ্বের ইঙ্গিত দিলেও এর সৃষ্টিতে অতিপ্রাকৃত শক্তি বা ভগবানের কোন হাত নেই। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনেই মহাবিশ্বের সৃষ্টি, ভগবানের ইচ্ছেতে নয়”।

যার কোনো শেষ নেই

বিজ্ঞানের কাছে সব প্রশ্নের উত্তর নেই; নেই সব সমস্যার সমাধান –এই কূট যুক্তিকে সামনে রেখে ভাববাদের প্রচারকরা ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণে উঠে পড়ে লাগলেও তাদের পুলকিত হওয়ার কোনো জায়গা নেই। পৃথিবীর স্থলভাগ, সমুদ্র, পাহাড়-পর্বত জয় করে চাঁদ থেকে মঙ্গলে, গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে পাড়ি দেওয়ার পর সূর্যের বুকে ঘটে চলা হাজারো ঘনঘটার উত্তর খুঁজতে ‘পার্কার সোলার প্রোব’ পৌঁছে গেছে সূর্যের খুব কাছে। উন্নতমানের টেলিস্কোপ ও কম্পিউটার এর সাহায্যে মহাবিশ্বের অলিন্দ থেকে উঠে আসছে শিহরণ জাগানোর মতো একের পর এক ছবি, যা হয়তো মানুষ কল্পনাতেও আনতে পারেন নি। বিজ্ঞান প্রযুক্তির অভূতপূর্ব বিকাশকে কাজে লাগিয়ে মহাবিশ্বের অনেক নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে, যার ব্যাখ্যায় নতুন তত্ত্বও বিকশিত হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ‘ডার্ক ম্যাটার’ এর তত্ত্ব তালাশে।

এখনও যেটুকু অধরা অজানা, সেইসবও কালের নিয়মে নিশ্চয় উদ্ভাসিত হবে বৈজ্ঞানিক যুক্তির উপর ভর করেই। বিজ্ঞান এভাবেই এগিয়ে চলে। জানতে জানতেই সে অজানার সমাধানে ব্যপৃত হয়, পরম শক্তিধর বিমূর্ত ঈশ্বরের লম্বা হাতও তার নাগাল পায়না। তাই ভগবানের অস্তিত্বকে তুড়ি মেরে স্পিনোজার প্রকৃতি ভাবনা–বিজ্ঞান ভাবনা এগিয়ে চলে ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল, ম্যাক্স প্লাঙ্ক, নিলস বোর, আইনস্টাইন, হকিং, পেনরোজ, কার্ল মার্ক্স, এঙ্গেলস, লেনিন সহ হাজারো সমাজতত্ত্ববিদ, বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের হাত ধরে সুদূর পানে, ছড়িয়ে পড়ে মানব সমাজ থেকে মহাবিশ্বের পথে প্রান্তরে।।

লেখক পরিচিতি:

বিজ্ঞান শিক্ষক, বিজ্ঞান পরিবেশ আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক।

যোগাযোগ: মেইল আইডি –

santoshsen66@gmail.com

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top